ভিশন বাংলা নিউজ: রমজান মাসের রাতে এশার নামাজের চার রাকাত ফরজ ও দুই রাকাত সুন্নতের পর এবং বিতর নামাজের আগে দুই রাকাত করে ১০ সালামে যে ২০ রাকাত নামাজ আদায় করা হয়, তাকে তারাবি নামাজ বলা হয়।
আরবি ‘তারাবিহ’ শব্দটির মূল ধাতু ‘রাহাতুন’। যার অর্থ আরাম বা বিশ্রাম করা। ইসলামের পরিভাষায় মাহে রমজানে তারাবি নামাজ পড়ার সময় প্রতি দুই রাকাত অথবা চার রাকাত পর পর বিশ্রাম করার জন্য একটু বসার নামই তারাবি।
মাহে রমজানে রোজাদার সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত রোজা রেখে ক্লান্ত হয়ে যান। তারপর রাতে এশা ও তারাবি নামাজ দীর্ঘসময় ধরে পড়তে হয়। সে কারণে দীর্ঘ নামাজের কঠোর পরিশ্রম লাঘব করার জন্য প্রতি দুই রাকাত, বিশেষ করে প্রতি চার রাকাত পর একটু বসে বিশ্রাম করতে হয় এবং দোয়া ও তসবিহ পাঠ করতে হয়। এজন্য এই নামাজকে সালাতুত তারাবিহ বা তারাবি নামাজ বলা হয়।
তারাবির নামাজ হলো রোজার গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ। রমজান মাসে তারাবি নামাজ জামাতে পড়া ও সম্পূর্ণ কোরআন শরিফ একবার খতম করা সুন্নতে মুয়াক্কাদা। এ নামাজ নারী-পুরুষ উভয়ের জন্যই সুন্নতে মুয়াক্কাদা। জামাতের সঙ্গে আদায় করা বেশি সওয়াবের হলেও ঘরে বসে আদায় করা যেতে পারে তারাবি। এ নামাজে কোরআন শরিফ খতম করা অধিক সওয়াবের কাজ।
তারাবির নামাজে প্রতিদিন ২০ রাকাতে ২০ রুকু করে পড়লে ২৭ রমজান লাইলাতুল কদরে পবিত্র কোরআনের সম্পূর্ণ অংশ যাতে পাঠ করা সমাপ্ত হয়, সেদিকে ইমাম সাহেবদের বিশেষভাবে খেয়াল রাখা দরকার। রাসুলুল্লাহ (সা.) তারাবি নামাজের জন্য রাতের কোনো বিশেষ সময়কে নির্দিষ্ট করে দেননি। তবে তারাবি নামাজ অবশ্যই এশার নামাজের পর থেকে সুবহে সাদিকের পূর্ববর্তী সময়ের মধ্যে আদায় করতে হবে।
তারাবি নামাজের ফজিলত ও মর্যাদা সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি ইমানের সঙ্গে পূণ্য লাভের আশায় রমজানের রাতে তারাবি নামাজ আদায় করেন, তার অতীতকৃত পাপগুলো ক্ষমা করা হয়। (বোখারি ও মুসলিম)
তবে ইচ্ছাকৃত ও নিয়মিত নয়, বরং দৈহিক বা মানসিক অবস্থা বিবেচনা করে ২০ রাকাত অথবা আট রাকাত তারাবির সুন্নত নামাজ পড়ার সুযোগ আছে। রমজানের পুরো এক মাস রাতে তারাবি নামাজ জামাতে আদায়ের ফলে পরস্পরের মধ্যে দেখা হওয়ার একে অপরের প্রতি মমত্ববোধ, সম্প্রীতি, ভালোবাসা, ভ্রাতৃত্ববোধ ও সৌহার্দ্য গড়ে ওঠে।